Monday, December 22, 2025
Homeকবিতাপ্রান্তরকয়েকটি কবিতা । ইউসুফ বান্না

কয়েকটি কবিতা । ইউসুফ বান্না

IMG_3019 vcopyস্বত্বনাম
আমি কি তোর থেকে প্রাণ নিচ্ছি মা
নাকি তুই ফিরিয়ে দিচ্ছিস আমাকে
আনমনা—
জীবনের রূপকথারা যেখানে ফেরারি
মেঘের গল্পে
বিস্তারিত!
ছিন্ন বকের ভাষায় উড়ার কল্পনা—
অনেক দিনের হাজার বছর আমার বিগত প্রভাতি।
তোর কবিতায় তবে এতো বাস্তব কেন বাস্তবতা
মাটির অনেক রং—রূপগ্রস্ত শশীর পাত্রে নিশির আলো
আমি উপুড় করে ঢেলে দিলে
তুই-ই তো জোসনার আত্মাও আত্মজা।

কারো কান্নার শব্দে চমকে উঠি—এমন আমি
স্বরের শেকড়ে যখন ধমনিতে ধাই
নিঃশ্বাসের এতো কাছাকাছি কে এই মানব বসে থাকে?
বিশ্বাস করবি না তুই এই প্রথম আমি
রক্তকে দেখাইনি ফিনকির ফাঁদ
শব্দকে যাতনার উপশম দিয়ে
গোধূলিকে থামিয়ে দিয়েছি অস্তরাগে
মাটির পুতুল আমার চোখ মেলে চাইলেই
আমি অঞ্জলিতে আলো ভরে নিই
সাতটা সপ্তকে সুর গেঁথে যায় রংধনুতে।

বহুদূর থেকে মগ্নতার দিকে ফেরার পথ আছে
তুই হাঁটলে আমি পাশাপাশি—
না হয় মগ্নতাতেই থাকি—তুই দিলে মা
চিনে রাখ আমার ঠিকানা।

নির্ভানা
ভূমিকার বদলে একটা প্রশ্ন রেখে দেয়া যায়
উনমনা কিছু বাক্যের তাগিদের চেয়ে
অসমাধানের ব্যাপিত সংযমের মাঝে
সাধনার তিলক এঁকে যোগাসনে বুদ্ধের সঞ্জীবনী
বোধের যুদ্ধে স্থির ভাস্কর্য যেন ভাস্করও
চোখ খুলবে মোক্ষ সময়ের দিব্যতায়
হয়তো স্পষ্ট পার্থিবে—

আমি জানি না বলেও চলে যেতে পারি
জানার সত্যে ঘোর— ঘুরতে ঘুরতে
চিরন্তনের বিষণ্ণ গ্রহ—
পৃথিবীটা নাটাইয়ের মাঞ্জা সুতোর শেষে
মহাজাগতিক ঘুড়ি রহস্যে খোলাবাক্যে ভোকাট্টা
হে জীবনী আমার প্রেরণা হবে কি তুমি?

আপাতত আমি প্রশ্নমালা থেকে প্রশ্ন নিয়ে যাচ্ছি
গুপ্তধনের কিংবদন্তি রচনার মৃত্যুগন্ধী কৌতুহলে
মানবের সমীরণ মানবতা এবং সমীকরণের ধাঁধায়
উত্তরের ঠিকানায় শুধু একটি নকশা পৌঁছে যাবে।

সুপ্তি
আলো কণ্ঠ খুঁড়ে পাপের পানীয় ঢেলে দিয়েছি জ্বলন্ত
সইল না তোর জলবৎ তরলং এ সত্য সহজ
আলোর বিবমিষায় উগড়ানো অন্ধকার
নিকষ ক্লেদের পথে নিদারুণ একা
হেঁটে যেতে যেতে শিষ দিতে পারি—গেয়ে উঠি চটুলতা
কেউ দেখবে না—ছোট হতে হতে অনু হয়ে পৌঁছাবো আলো
বীক্ষণেও বুঝবে না কার এই স্বত্ত্ব সাকার

আমি নিজের ছায়ার চেয়েও ছোট হয়ে আছি
তবে ভুল হল আলো-মাতাল বুঝি অন্ধকার?
তুচ্ছতম সর্বনামে ডাক দিলে বিশেষণে জেগে উঠি
সূক্ষ্ম সুপ্তির ভেতর খুব কষ্টের কাছে অন্ধ হয়েছি স্বপ্ন
আর কত বলো আর কত আর…

হননের কাছাকাছি থাকি শমন সঙ্গিনী
হতে পারে; জীবন-তো বহুবিধ অশনি সঙ্গম
চোখ আছে বলে দেখার যাতনা বুঝি
.
তবু বলে রাখি কোনক্রমেই আমার
অনুতাপ হয় না কখনো—

Untitled-1wyvw copyলেখাগুলো প্রকাশিত হয়
হরমা’ প্রথম বর্ষ  সংখ্যা-১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮

এইরকম আরও পোস্ট
- Advertisment -
ad place