ফিলাডেলফিয়া’য় বিপুল উৎসাহ ও প্রাণবন্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো (৩১শে মে, ২০২৫) বহুল প্রত্যাশিত ফিলাডেলফিয়া বইমেলা। সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দিনব্যাপী মেলা রূপ নেয় এক আনন্দঘন মিলনমেলায়—যেখানে অংশ নেন প্রবাসী সাহিত্যপ্রেমী, শিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, শিশু-কিশোর এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ।
ডালা উন্মোচন ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মেলার শুভসূচনা হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন কামরুল হাসান ও মারুফ। শিশু-কিশোরদের জন্য শিশু কানন অঙ্কন সৃজনী পর্বটি পরিচালনা করেন আব্দুল হাফিজ চৌধুরী ও ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। ভায়োলা ও ভায়োলিন বাজায় ফারিয়া রুবাইয়াত ও তানাজ আহমেদ।
দুপুর ১টায় বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নাট্যকার, কবি বদরুজ্জামান আলমগীর। প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথিরা দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন আব্দুল হাফিজ চৌধুরী।
পেনসিলভেনিয়ার গভর্নর জশ শাপিরোর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করেন আকবর হোসেন, এবং ফিলাডেলফিয়া মেয়র শেরল পার্কারের শুভেচ্ছা বাণী পড়ে শোনান ডক্টর নীনা আহমেদ।
বিকাল ২:৩০টায় পৃষ্ঠপোষকদের বক্তব্য ও সমন্বয়কদের পরিচয়ের মাধ্যমে মূলমঞ্চের প্রথম পর্ব শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ, ড. ইবরুল চৌধুরী, আহমদ সায়েম, জোহরা খাতুন কলি, আব্দুল হাফিজ, কামরুল হাসান ও আশরাফুল আরিফ। এ পর্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে বাংলাদেশের এক ঐতিহাসিক পরীক্ষিত বন্ধু ফিলিস টেইলর।
আবু আমিন রহমান, কাদেরী কিবরিয়া, জিয়াউদ্দিন আহমেদ, আবু তাহের, শওকত ইমাম, ফেরদৌস নাজমী, কামরুজ্জামান ও সুব্রত রায়-কে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।
এবং
বিশ্বজিৎ সাহা-কে প্রদান করা হয় আজীবন সম্মাননা পদক।
কবিতা ও লেখাপাঠে অংশ নেন- ফারুক আজম, রুমানা আলম, দিলরুবা আফরোজ রুবা, আহমদ সায়েম, বেনজির শিকদার, মাসুম আহমেদ, আহমেদ সউল, আনিস রহমান, সুমন শামসুদ্দিন এবং বদরুজ্জামান আলমগীর। সঞ্চালক হিসাবে ছিলেন সুমন শামসুদ্দিনে এবং আহমদ সায়েম।
সাহিত্যপত্রিকা ফিলাডেলফিয়া এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রবাসী কবি, লেখক ও বিশিষ্টজন।
নারীর মর্যাদায়ন: সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে নারীর ভূমিকা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন ডা. ফাতেমা আহমেদ, শামসুন্নাহার, নাজনীন কবিতা, ফারহানা আফরোজ পাপিয়া, তাহমিনা শিকদার ও মনি খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সালমা হক ববিতা। গোলটেবিল আলোচনাটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক আবুল খায়ের মিয়া।
নাজনীন কবিতা, মনি খান, তাহমিনা শিকদার, ইসরাত পারভীন ও দিতি হোসেন-কে নারী উদ্যোক্তা ২০২৫ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জনপ্রিয় লেখক সাদাত হোসাইন, যিনি উপস্থিত দর্শকদের জীবনের হৃদয়ছোঁয়া গল্প উপহার দেন।
বিশ্ব পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক সেমিনার: বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতি ও বাঙালি সংস্কৃতির মনোবাঞ্ছা শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন রাজিয়া নাজমী, ড.জীবন বিশ্বাস, জাফর বিল্লাহ ও বদরুজ্জামান আলমগীর।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার সঞ্চালনায় ছিলেন মাসুদুল হাসান, সারোয়ার ড্যানিয়েল ও সামসুম মনিরা কস্তুরি। সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেন জাফর বিল্লাহ্, বিজয়া সেনগুপ্তা, মুরাদ হোসেন, এমাদ রনী, জাকির হোসেন, প্রিয়াংকা বিশ্বাংঘ্রী, ঝুমা দাশ, সাদিয়া এবং শিউলি বেগম।
বইমেলা উপলক্ষে একটি দৃষ্টিনন্দন দেওয়াল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। দেওয়াল পত্রিকার নাম জীবন আমার বোন– যা সম্পাদনা করেন জোহরা খাতুন কলি। এবং একটি ‘ফিলাডেলফিয়া’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়। সম্পাদনা করেন আহমদ সায়েম। জানা যায় পত্রিকাটি বছরে অন্তত চারটি সংখ্যা তারা প্রকাশিত করবেন।
সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন মেলার পৃষ্ঠপোষক প্রফেসর ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ– যিনি আয়োজক, অতিথি অভ্যাগতদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।