Tuesday, December 23, 2025
Homeকবিতাপ্রান্তরকয়েকটিশব্দেরছায়া । আহমদ সায়েম

কয়েকটিশব্দেরছায়া । আহমদ সায়েম

Untitled-1 copyকয়েকটিশব্দেরছায়া


কোথাও শব্দ হচ্ছে                  শব্দ হচ্ছে কোথাও
পুড়ছে এমন শব্দ                    গন্ধ হচ্ছে খুব
তৃপ্তি নিয়ে বলা যায়
গতকাল রাতের শরীরে ছিলো বৃষ্টির গন্ধ
স্বপ্ন ছিলো এবার বৃক্ষে ফসল না এলেও তার
গন্ধ ও ছায়ায় শুনা হবে উজ্জ্বল সংগীত…
রূপসী ছায়ার সাথে নেবো সহজ চুক্তি

আমার হলুদ
দিনগুলি নদীর নীরব উজ্জ্বলতায়
নিমগ্ন করে দিও
আর বলো সময়ের চোখ এখনো শূন্যতায় তৃপ্তি খোঁজে…
আহ…শব্দ হচ্ছে…গন্ধ হচ্ছে খুব…


হাত বাড়িয়ে বল্লে সরল পথ, আমি শব্দ খুঁজি, আওয়াজ শুনি
পথ ও ছায়ার…
যে শব্দে নিষিদ্ধ ছিল পেশল আর মিষ্টি সব বাসনা
পথের ধারে গাড়ির শব্দ শুনো…বুঝতে পারলে কিছু
অনেক সময় গড়িয়েছে,
ভুলগুলোও মিথ্যে, সন্ধ্যায় যে গন্ধ নিয়ে রচনা দিয়েছিলে
ওখানে এখন অনেক শব্দ–ছায়াদের
ভাষা ছিল, সূক্ষ্ম ছিল তাদের দৃষ্টি ও ঘুমের প্রকাশ
অথচ এখন–আকাশ ছুঁয়ে ধুলোর মেলা


কিছু গৌণ কথা নিয়ে খেলা করো আকাশ পাতাল
প্রকৃতি অনিবার জানলে হয়ত কিছু দীপ্তি পেতে
অথচ বাগানে অন্য সুর–
ডানার শব্দ শুনে মনে হয় অর্চনা নেবে…
যদি অমৃত কোন ছায়া না আসে, আরো নির্মম দেখি পথের রেখা
তবে নষ্ট হোক মুখরতা, সকল সুস্মিত আর কৌশল…
একবার দেখ–মেঘের ধারে বসে তোমার হাত দেখ
কীরকম নানা রঙের প্রজাপতিরা খেলা করছে দুপুর জুড়ে
কেউ রঙ দেখে র্নিমাণ করছে তার স্বপ্ন
কেউ নিজের ডানায় লিখে রাখছে বিকৃত সমাজ, আর তুমি
নতুন করে কৌশল আঁকছো লাল ও সবুজের…


যেন ভিন্ন সুর
ভোরের আলো জানিয়ে দেয় নতুন এক দিনের সূচনা
সূচীত হচ্ছে জ্ঞান, শিশুটি প্রশ্ন করে
–মাঠের মধ্যে একটাই বল  কেন,বৃষ্টি
কোথা থেকে আসে, পাখিটা শব্দ করে কেন…
অপরাধীর দৃষ্টিতে তাকানো ছাড়া অন্য জ্ঞান নেই
যে কয়টি মেঘ জমিয়েছি তাকে বলি, তোমার সবগুলো গন্ধ শিশুটি
জানে,                      তার রয়েছে ভিন্ন সুর ও স্বপ্ন
তাই শিরদাঁড় শক্ত করে সমুখে তুলে ধরি
কয়েকটি শাদা শাদা বৃক্ষ তার দৃষ্টিতে রাখি
চুপ চাপ মুদ্রিত হচ্ছে নিদ্রা, বৃষ্টি ও লুকোনো পাথরের দৃশ্য
কিছু গন্ধ তুলে রাখি শূন্যে, ভোরের আলোয় লিখে রাখি
সূচিত দিন ও সূর্যের দীর্ঘকণ্ঠ…


ক্লান্তিতে হাত খুলে দেই, তুমি আর স্বপ্ন নিলে না
বল্লে- শুয়ার রুমে আগুন ছিল ভোরে, অথচ তুমি বিশ্বাস
কর প্রজাপতি রঙ আর বৃষ্টির ফুটা
তুমি বল্লে                                এখন আমার প্রছন্দ রক্ত রঙ
গণধর্ষণ, গণকবর ও পছন্দ হয় মাঝে মধ্যে…
একবার একজন বল্ল-কুয়াশায় নদীর জল গোনার ইচ্ছে তার
যে মেয়েটি রিকশা করে যাচ্ছে নদীপথ তার পছন্দ ছিলো
লাল ঘুড়িটা উড়িয়ে আকাশ মাতাবে
একদিন সবাইকে সে বলেছিল…আহ
কোনো কুয়াশা বা সংকেত হবেনা এমন একটা ভাষার রূপ দেবে সে
আমাদের লাল ঈশ্বর ও বিষাক্ত সাপের দৌড় হবে ঠাণ্ডা শূন্যতায়
আর ভাঙনের শব্দ অনেকের প্রিয় একটি মূহূর্ত…
না– আজ ভোরের ছায়ায় তুলে রাখব চুম্বনের কয়েকটি শরীর
আর ক্লান্তিতে নেব ঈশ্বরের মেঘ মন্ত্র


যার সাথে চেনাশোনা ভালো
তার এক বন্ধু-নাম নিলো
বহ্নি
অভিনবত্ব ছিলো তার ছায়ায়, তার উদ্বেগ আর
শাদা রঙের মানে দিত-আতঙ্ক
অমাবস্যা রাতের নিচে জলের যে প্রবাহ তার
ভাষা ও প্রকাশ জানে ফেরিওয়ালার কুমারি মেয়ে
দীর্ঘ বালুচর…
ধূলিখেলা ছাড়া অন্য কোনো কথা হয়নি তাদের
তবু পা বাড়ায়-নদীর জলে অংক হবে এবার
যৌথখামার হবে নতুন সুরে…
পরে যুবকটি অন্য অর্থ নিয়েছে তার ছায়ার
কুড়ানো শখ কুড়ানো গন্ধ তার গায়ে…
আর সকল ঠাণ্ডা শব্দের অর্থ দিত সে ‘আতঙ্ক’


রাতের কাছে কৌশল নেব তাই পণ করে তার কোল ঘেষে বসি
দৃষ্টি শক্ত করি, ভাবি উড়ন্ত শৈশব…
মনে আনতে চেষ্টা করি অবৈধ শাসনের শেষবাক্য
দেখা হয়–সন্ধ্যায় যে তীব্র নগ্ন রূপ ছিলো তা এখন নিয়তি
তবু কৌশল বুঝি না, কোথাও ভুল হচ্ছে…
কীর্তি নিয়ে অক্ষমতা বলি–তবো কোনো চিহ্ন নেই, পাঠ নেই
একবার এক যুবক তার হাত দেখিয়ে বলেছিলো
সর্দিকাশি হলে দরজায় তালা দিয়ে বসবেন, আর পুরুষদের
জানিয়ে রাখেন বুদ্ধের মৃত্যু হবে আমার হাতে


রোদ বৃষ্টি যাই হোক হাত মন্ত্র ছিল আকাশ ছোঁয়া খেলা
আকাশটাও মাতাল ছিলো তখন
ঘরের বাইরে কুয়াশা ছিলো কি না তা এখন
মনে না থাকিলেও
ফের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রবাহিত সব চিৎকার, আর
তোমার আর্তনাদ যা দিয়ে তুমি পুরুষ হয়েছিলে, তখন
যে কোনো মেয়ে মানুষ ছিলো না এইটুকু মনে আছে
ফুলের গন্ধ আর চিৎকারে প্রবাহিত হল কতো বছর
তবু হাত মন্ত্র আর নিরান্নবই এক অন্য রকম অন্তর্বহুল দৃশ্য ছিল

আহমদ সায়েম
আহমদ সায়েমhttp://raashprint.net
কবি, সম্পাদক, পুস্তকপ্রকাশক, স্থিরচিত্রগ্রাহক ও স্বতঃপ্রণোদিত তথ্যচিত্রনির্মাতা। আবির্ভাবকাল বিবেচনায় একবিংশ শতকের প্রথম দশকের লেখকদলের অন্তর্ভূত। পূর্বপ্রকাশিত কবিতাবই তিনটি : ‘অনক্ষর ইশারার ঘোর’ ২০১৫, ‘কয়েক পৃষ্ঠা ভোর’ ২০১৯, এবং ‘রুদ্ধজনের রাগ ও সম্বিৎ’ ২০২৫; অন্য বই ইংরেজিতে অনুদিত : ‘The layers of Dawn’ ২০১৮ সালে বের হয়েছে। সম্পাদনা করেন সাহিত্যপত্র ‘সূনৃত’ ও ওয়েবম্যাগ ‘রাশপ্রিন্ট’। ছোটকাগজ সম্পাদনায় পেয়েছেন ‘সমুজ্জ্বল সুবাতাস ২০১৩’ সম্মাননা। যুক্তরাষ্ট্রেরে প্রথম রাজধানী ফিলাডেলফিয়া, সেখানে প্রথম ‘বইমেলা ৩১ মে ২০২৫’ করতে সক্ষম হন। ফিলাডেলফিয়ায় প্রথম বাংলা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ এবং সম্পাদনা করেন ‘ফিলাডেলফিয়া, মে ২০২৫’ নামেই। নাট্যসংগঠনের সঙ্গে সংলিপ্ত। জন্ম ও বেড়ে-ওঠা বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব সীমান্তবর্তী সিলেট শহরে ৫ জানুয়ারি ১৯৭৮ সালে। পেশাসূত্রে সপরিবার বসবাস যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। বিষাদমুক্ত, ভ্রমণপ্রিয়, বন্ধুবৎসল। ফোন : +1 (929) 732-5421 ইমেল: ahmedsayem@gmail.com
এইরকম আরও পোস্ট

1 COMMENT

Comments are closed.

- Advertisment -
ad place